মৌমাছিকে চিনি খাওয়ানো হয় কেন?
বছরের একটা বড় সময়- বর্ষাকালে ফুল কম ফোটে। তাই মৌমাছিরা বছরের অন্যান্য সময়গুলোতে মধু সঞ্চয় করে রাখে যাতে ফুল না ফুটলেও পেটটা বাঁচানো যায়। খাওয়া-দাওয়া করা যায়। বেশিভাগ ফুলের মূলত সময় হচ্ছে শীত, বসন্ত ও গ্রীষ্ম। মাঠের মৌয়ালরা যখন একটা মধুর চাক কেটে নেন তখন মৌমাছিদের কী হবে তা তারা চিন্তা করেন না। কিন্তু যারা মধু চাষ করেন তাদের নিজেদের পোষা মৌমাছিদের কথা চিন্তা করতেই হয়। একটু যত্ন-আত্মি, খাতির তাদের করতেই হয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বছরের যে সময়টাতে ফুল থাকে না সেসময়গুলোতে মৌমাছিদের থেকে মধু সংগ্রহ তো দূরের কথা, তাদের বাঁচিয়ে রাখাটাই একটা মুশকিলের ব্যাপার।
চিনি বা গুড়মেশানো পানি আসলে সেই প্রচেষ্টারই অংশ। ফুলের নেকটারে যে পরিমাণ পুষ্টি বা খনিজ উপাদান আছে সেগুলো তো আর চিনিতে নেই। তাই চিনিপানি খেয়ে মৌমাছিগুলো কোনোমতে বেঁচে থাকে – ঐ সময়টাতে সে মধু উৎপন্ন করে না।
তাহলে মধু উৎপন্ন হয় কীভাবে?
যখন সরিষা ফুল ফোটে, তখন মৌচাষীরা তাদের বাক্স-প্যাটরা নিয়ে তাবু গাড়ে সরিষা ক্ষেতে। যখন লিচু ফুলের সময় তখন মৌবাক্সগুলো নিয়ে যায় দিনাজপুরের লিচুবাগানে। এমনি করেই সংগ্রহ করা হয় বরই ফুলের মধু কিংবা কালিজিরা ফুলের মধু।
তাই মৌমাছিকে চিনির পানি কেন খাওয়ানো হয় তা নিয়ে বিশেষ দুশ্চিন্তায় ভোগার কিছু নেই। মৌমাছিকে চিনি বা গুড়ের পানি খাওয়ানোর অর্থই সেটা ভেজাল মধু, এটা একটি ভুল ধারণা!