শীতের ডাক

একটা পুকুর। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ‘দুখের গাছ’। গাছের আবার দুঃখ কী? দিনের বেলাতে এই গাছের ফুলের উজ্জ্বলতা হারিয়ে যায়। গাছটাকে আমরা চিনি ফুলে। শিউলি ফুল। সন্ধ্যায় ফোটা আর সকালে ঝরে যাওয়া যার বৈশিষ্ট্য। শরৎ ও হেমন্ত কালের শিশির ভেজা সকালে ঝরে থাকা শিউলি অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য তৈরি করে। দৃশ্যটা দেখার জন্য প্রায়ই গাছ তলায় যেতাম।
এ সময়টায় গ্রামের সামর্থ্যবান অনেক বাড়িতে চোখে পড়ে খড়ের গাদা। ছোট ছোট ডানপিটে বাচ্চাগুলো এগুলো নিয়ে খেলা করে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা সাত সকালে কিছু খড় কুড়িয়ে এনে আগুন জ্বালিয়ে চারপাশে বসে শরীর গরম করে।
আমাদের উত্তরবঙ্গের গ্রামগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষের সংখ্যা অনেক বেশি। এখানে শীতের তীব্রতা আঁচ করা যায় অনেক আগে থেকেই। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে শীতের তীব্রতা। কনকনে ঠান্ডা আর শৈত্য প্রবাহে কতক্ষণ আর আগুন জ্বালিয়ে বসে থাকা যায়! ছেঁড়া কাথা বা ফুটো কম্বলে কোনরকমে শীত নিবারণ চলে। ওদিকে খড়ের ঘরের ফুটোগুলো দিয়ে বাতাস ঢুকতেই থাকে!
আমরা যারা শহরে থাকি শীতের তীব্রতা টের পাই কদাচিৎ। আমাদের সকলের একবার অন্তত ঘুরে আসা উচিত শীত কবলিত এলাকাগুলো।
ব্যবসা বা চাকরি করে আমরা অনেকেই দিনশেষে হিসেব কষি, চাওয়া-পাওয়ার গল্প বুনি। যা কখনো শেষ হওয়ার নয়। আমরা চাই অনেক, কিন্তু যতটুকু পাই তার হক কি আদায় করা হয়! আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:
“প্রতিদিন সকালে দু’জন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন দানকারীর জন্য দু’আ করে বলেন, “হে আল্লাহ দানকারীর মালে বিনিময় দান কর। (বিনিময় সম্পদ বৃদ্ধি কর)” আর দ্বিতীয়জন কৃপণের জন্য বদ দু’আ করে বলেন, “হে আল্লাহ কৃপণের মালে ধ্বংস দাও।” (বুখারী ও মুসলিম)
আমাদের মনে রাখা উচিত যে সম্পদ আমাদের আছে তা আল্লাহ তাআলার করুণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি যাকে ইচ্ছা দান করেন। আমাদের দায়িত্ব সঠিক খাতে তা ব্যবহার করা।
কিয়ামতের দিন যে পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোনও মানুষ সামনে যেতে পারবে না, তম্মধ্যে দুটি প্রশ্নই ধন-সম্পদ বিষয়ক। প্রশ্ন করা হবে, কোন পথে সম্পদ উপার্জন করেছ এবং কোন পথে তা ব্যয় করেছ। একটু চিন্তা করি উত্তর দেয়ার মত কিছু আছে কী আমার ভান্ডারে!
এমন অনেকেই আছেন যারা সামর্থ্য রাখেন না শীত নিবারণের জন্য ন্যূনতম কিছু কিনতে। আবার চাইতেও পারেন না অন্যের কাছে, নিজ আত্নসন্মানের জন্য।
এমন মানুষদের কথা আল্লাহ সুবহানাতাআলা বলেছেন,
“এবং তাদের সম্পদে নির্দিষ্ট হক রয়েছে। ভিক্ষুক এবং বঞ্চিত (অভাবী অথচ লজ্জায় কারো কাছে হাত পাতে না) সকলের হক রয়েছে।”(সূরা মা’আরিজ : ২৪-২৫)
প্রতিবছর অনেকেই সস্তা কম্বল কিনে অনেক জায়গায় বিলি করে। এক পরতের কম্বলগুলো তীব্র শীতে খুব কমই কাজে দেয়। আমাদের অনুরোধ থাকবে একটু দাম দিয়ে হলেও ভালো মানের কম্বল কিনে দেওয়ার। এতে শুধু দেওয়ার স্বার্থে দেওয়া না, কাজের কাজ অর্থাৎ শীত নিবারণ হবে। কমদামী কম্বল একটা মৌসুম-ও যায় না। প্রতিবার তার অভাবটা থেকেই যায়।
আবার অনেককে দেখা যায় এমন স্থানে বিতরণ করেন যেখানে দিতে সুবিধা। কিন্তু আমাদের তো আসলে তাদের কাছে যাওয়া উচিত যাদের দরকার। আগে থেকে অভাবী মানুষদের তালিকা তৈরি না করলে দেখা যায় যাদের গায়ে জোর বেশি এবং এলাকায় দাপট বেশি তারা কম্বল নিয়ে যায়। অথচ যাদের দরকার তারা অবহেলিত থেকে যায়!
সরোবরের সামাজিক ব্যবসার একটি অন্যতম উদ্যোগ কম্বল বিক্রি করা। কম্বলগুলো তৈরি করা হয় মূলত ঝুট কাপড় থেকে। দুই পরতের এ কম্বলগুলো গ্রামের হাড় কাঁপানো শীতে খুব ভালো কাজে দেয়।
সাথে সাথে আমরা বিক্রি করছি হুডি এবং শাল। হুডিগুলো মূলত শিশু-কিশোরদের জন্য। আর শাল পুরুষ-মহিলা সবাই ব্যবহার করতে পারে। মোটা এই শালগুলো তীব্র বাতাসেও ভালো ওম দেয়।
এক একেকটি কম্বলের দাম পড়বে ৩৩০ টাকা, শালের দাম ৩৫০ টাকা এবং হুডির দাম ২২০ টাকা মাত্র।
তবে পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় আলাদা করে ডেলিভারি চার্জ দিতে হবে।
আপনি যদি অনেকগুলো শাল-কম্বল কেনেন তবে আমাদের নক করলে আমরা জানিয়ে দেব আপনি যে কটি পণ্য কিনছেন এবং যেখানে ডেলিভারি নেবেন তাতে মোট খরচ কত পড়বে।
আর যদি আপনাদের পক্ষে শীতার্ত মানুষদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব না হয়, আমাদের দায়িত্ব দেন হকদার মানুষের মধ্যে কম্বল, শাল এবং হুডি বিতরণ করার তবে কম্বলের ডেলিভারি চার্জ ৩০ টাকা, শাল এবং হুডি ২০ টাকা করে।
অর্থাৎ ঢাকা থেকে আপনি দশটা কম্বল কিনলেন যেটা আমরা পঞ্চগড়ে দশজন গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন তাহলে আপনার মোট খরচ পড়বে ৩৩০+৩০ = ৩৬০ X ১০ = ৩৬০০ টাকা মাত্র।
অর্ডারের লিঙ্কঃ https://www.shorobor.biz/warmth-in-winter/
যে কোন তথ্য বা অর্ডার এর জন্য যোগাযোগ করতে পারেন – 0186100 5555 অথবা 01318 240 498
আমাদের সকলের ছোট ছোট পদক্ষেপগুলো যেন আল্লাহ কবুল করে নেন।