Talbina Blog

আলসারের চিকিৎসায় তালবিনাই ভরসা!

মিসেস আলম এই নগরীর বিশিষ্ট ঝাল খোর মহিলা। লোকমুখে তার রান্নার বিশেষ সমাদর থাকলেও তার রান্না খাবার খেয়ে সাধারণ লোকের কান দিয়ে ধোঁয়া বের হওয়ার জোগাড় হয়। প্রায়ই তাকে আলসারের ব্যথায় শয্যাশায়ী অবস্থায় দেখা যায়। মিস্টার আলম তার ঝাল খোর বউকে নিয়ে হতাশ।

তাই তাদেরকে নিম্নোক্ত কথোপকথন করতে দেখা যায়,
এত বলি ঝালটা একটু কম খাও। নিজের তো বারোটা বাজিয়েছে এরপর আশেপাশের সবার বারোটা বাজবে।

মিসেস আলম উদাস কন্ঠে জবাব দেয়,
দুই দিনের দুনিয়া কত দিন আর বাঁচব। ঝাল ছাড়া তরকারি বিস্বাদ লাগে। আহা তুমি তো দেখি হুহা করছো। এক চামচ চিনি দেই?

মিস্টার আলম হতাশ চোখে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকেন। ভাত এবং গরুর মাংস ভুনা সাথে এক চামচ চিনির স্বাদটা মনে মনে চিন্তা করার চেষ্টা করেন।

বুধবার সন্ধ্যাবেলা বাড়ি ফিরে এসে ডাইনিং টেবিলের উপর সরোবরের তালবিনার বড় কৌটা দেখে আলম সাহেব যা বোঝার বুঝে গেলেন। উনি এখন চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন আজ রাতে তরকারি রং টকটকে লাল এর বদলে একটু হলদে হবে। তাতে আস্ত কিছু কাঁচা মরিচ ভাসতে দেখা যাবে।

এই ঘটনা নতুন কিছু না। প্রায়ই মিসেস আলম আলসারের ব্যাথায় কুপোকাত হন‌ । তখন নিয়ম করে তিনবেলা তালবিনা খান। সাথে কাঁচা মরিচের তরকারি।

আলম সাহেব খাবার টেবিলে স্ত্রীকে টিটকারির সুরে বলে উঠেন কি এবার হলো তো? খাও আরো ঝাল খাও। এই রহিমার মা আপনার আপাকে দুই চামচ মরিচ দিয়ে যানতো তো।

মিসেস আলম করুন চোখে তাকান।

বিশ্বাস করো এইবার ভালো হয়ে যাব। এক চামচের বেশি মরিচ আর দিব না তরকারিতে।

মিস্টার আলম হলফ করে বলতে পারেন পনের দিনের মধ্যে ডাইনিং টেবিলে আবার টকটকে লাল রঙের তরকারি দেখা যাবে। তারপর আবার তালবিনা ট্রিটমেন্ট শুরু হবে।

মিস্টার আলম এর মত ঝাল খোর স্ত্রী যাদের আছেন, ঝাল খেয়ে খেয়ে যারা গ্যাস্ট্রিক আলসার বাঁধিয়েছেন, তারা সুন্নাহ চিকিৎসা হিসেবে স্ত্রীকে উপহার দিতে পারেন তালবিনা। সাথে স্বাদ বাড়াতে কয়েক টুকরো খেজুর মিশিয়ে দিতে পারলে তো আর কথাই নেই! আর সেই সাথে এটাও বলে দিতে ভুলবেন না- অতি ঝাল ভালো নয়।

এবার মনে কি প্রশ্ন উকি দিচ্ছে, ‘তালবিনা কোথায় পাওয়া যায়‘ ? কোথায় আবার! আপনারা সরোবরেই পেয়ে জাচ্ছেন নির্ভেজাল তালবিনা।