শীত অভিযান ২০২২-২৩
প্রতি বছর সরোবরের শীত অভিযান শুরু হয় ঢাকায় শীত জেঁকে বসার আগেই। তবে ভোরে ফজরের পর যখন আমরা বের হয়েছিলাম তখন ঠান্ডা ছিল ভালোই।

এবার আমরা কম্বল এবং হুডি দিয়ে গিয়েছিলাম পাবনা এবং বগুড়াতে। ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার সাধারণ পথ যমুনা সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জ দিয়ে।কিন্তু সময় বাঁচাতে আমরা এবার গেলাম মানিকগঞ্জের আরিচা ঘাটে।

সেখানে আছে সারি সারি স্পিডবোট।

আধঘন্টা প্রবলবেগে পানি ছিটিয়ে আমরা পৌছলাম কাজীরহাট লঞ্চঘাটে।

স্পিডবোট থেকে নেমে কিছু খেয়েই উঠে গেলাম ভ্যানে। গন্তব্য নগরবাড়ি। নতুন ধান উঠেছে। পথের ধারে ধান মাড়াই চলছে।

প্রায় পাঁচটা গ্রাম মিলিয়ে মানুষদের তালিকা করা ছিল। তারা স্লিপ নিয়ে চলে এলো পূর্ব নির্ধারিত স্থানে।

বিতরণ শুরু হলো। কম্বল পেয়ে খুশি গরীব মানুষগুলো।

এবার আমরা রওনা দিলাম বগুড়ার উদ্দেশ্যে। শীতের নদী। চর পড়েছে অনেকখানেই।

বার পাঁচেক বাস আর সিএনজি বদলিয়ে যখন বগুড়ার মালঞ্চা বাজারে পৌঁছলাম তখন রাত হয়ে গেছে। এই এলাকাতে এখনো বেশ কিছু মাটির ঘর আছে। আগেই পাঠিয়ে দেওয়া কম্বল আর হুডির বস্তা রাখা ছিল এই বাড়িটাতে।

পরেরদিন সকালবেলা। কাছের একটা মাদ্রাসার জনা ত্রিশেক বাচ্চার জন্য হুডি এনেছিলাম আমরা। সেটা তাদের পরিয়ে দেওয়া হলো।

এবার বড়দের পালা। কম্বল দেওয়ার আগে ইসলামের মৌলিক কিছু কথা তাদের বলা হয়।

এই দাদীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আপনার একটা ছবি তুলি। তিনি রাজিই শুধু হননি, খুশি হয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দু’আও করে দিলেন।

এই খুশি, এই দু’আ শুধু আমাদের জন্য না, আপনাদের সবার জন্য যারা আমাদের সাথে শরীক হয়েছেন।

বিতরণ শেষ হতে সবাই ফিরে গেল।

এভাবেই আপনাদের কেনা শাল-কম্বল-হুডি আমরা পৌছে দিই গরীব মানুষদের মাঝে যাদের দরকার। পৌষ আর মাঘ – শীতের মূল দুই মাস এসে জেঁকে বসার আগেই মানুষগুলোর কাছে আমরা পৌঁছে দিতে চাই গরম কাপড়। আপনারা পাশে দাঁড়াবেন এই কামনায়।